আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক পরীক্ষা ফের শুরুতে বাড়ছে বৈশ্বিক উদ্বেগ।
বিশ্বজুড়ে ফের স্নায়ুযুদ্ধের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সিদ্ধান্তকে ঘিরে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি প্রতিরক্ষা দপ্তরকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। এতে ৩৩ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র আবারও এমন পরীক্ষায় ফিরতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরই তিনি দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেন। ঘটনাটি ঘটেছে এমন এক সময়ে, যখন রাশিয়া সফলভাবে নতুন পারমাণবিক চালিত ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর পরীক্ষা চালিয়েছে এবং চীন দ্রুত নিজেদের পারমাণবিক ভান্ডার বাড়িয়ে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, চীন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডারে যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে, রাশিয়া ইতোমধ্যেই তার অস্ত্র কর্মসূচি আরও শক্তিশালী করছে। এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পদক্ষেপকে অনেকেই পারমাণবিক প্রতিযোগিতার নতুন সূচনা হিসেবে দেখছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগ বৈশ্বিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে দুর্বল করতে পারে। তাদের মতে, এতে রাশিয়া, চীন, ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোও পুনরায় পারমাণবিক পরীক্ষা শুরু করতে উৎসাহিত হতে পারে—যা বিশ্বকে একটি অনিশ্চিত ও বিপজ্জনক স্নায়ুযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে।
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ১৯৯৬ সালে সই হওয়া সার্বিক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (সিটিবিটি) সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো সেটি অনুমোদন করেনি। ফলে আইনগতভাবে তারা বাধ্য নয়। এই সুযোগেই যুক্তরাষ্ট্র ফের পরীক্ষার পথে হাঁটছে—যার প্রভাব বৈশ্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

