![]() |
| ভুয়া জুলাই যোদ্ধা |
নিজস্ব প্রতিবেদক | মৌলভীবাজার
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ তদন্তে কুলাউড়া উপজেলার ছয়জন ভুয়া গেজেটেড ‘জুলাই যোদ্ধা’র নাম বাতিল করা হয়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে তাদের গেজেট বাতিলের ঘোষণা আসে।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)-এর সুপারিশ এবং সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
- তদন্তে অসঙ্গতি প্রমাণিত
সূত্র জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ সংশ্লিষ্ট ভুয়া গেজেট ব্যবহার করে দীর্ঘদিন বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছিলেন। অভিযোগের পর জামুকা তদন্ত শুরু করে। তদন্তে তাদের গেজেট প্রাপ্তির প্রক্রিয়া ও যোগ্যতায় গুরুতর অসঙ্গতি ধরা পড়ে।
- বাতিলকৃত গেজেটেড জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা
গেজেট নং–১৫: নুর ইসলাম আহমদ সুজন
পিতা: মৃত আব্দুর রহমান | মাতা: মিনু বেগম
ঠিকানা: ব্রাহ্মণবাজার, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার
গেজেট নং–৪১: মিনহাজুর রহমান লিমন
পিতা: মোহাম্মদ আতাউর রহমান | মাতা: লুৎফা রহমান
ঠিকানা: বৈদ্যশাসন, টিলাগাঁও, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার
গেজেট নং–৪৬: দেলওয়ার আহমদ সেলিম
পিতা: মৃত মো. আবু তাহের | মাতা: রেজিয়া খানম
ঠিকানা: উত্তর চাত্তলগাঁও, কাদিপুর, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার
গেজেট নং–৪৯: মো. রিয়াদ মাহমুদ রকি
পিতা: বাহা উদ্দিন | মাতা: রিপা বেগম
ঠিকানা: মাগুরা, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার
️ গেজেট নং–৫০: আরিফুল ইসলাম
পিতা: মো. রফিকুল ইসলাম | মাতা: আছিয়া বেগম
ঠিকানা: উছলাপাড়া, আলালপুর, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার
গেজেট নং–৫১: শেখ মাহফুজুর রহমান মাহিন
পিতা: মুক্তার আলী | মাতা: রাবিয়া বেগম
ঠিকানা: জয়পাশা, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার
-প্রশাসনিক পদক্ষেপ
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০০২ এবং সংশোধিত প্রশাসনিক নির্দেশনা অনুযায়ী, তদন্তে অসঙ্গতি প্রমাণিত হওয়ায় তাদের গেজেট বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “গেজেট প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও তথ্যগত ত্রুটি প্রমাণিত হওয়ায় উল্লিখিত ব্যক্তিদের গেজেট বাতিল করা হলো।”
এই সিদ্ধান্তের ফলে তারা আর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তা পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।
-স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ এই সিদ্ধান্তকে ন্যায়সঙ্গত ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা রক্ষা পেল।
একজন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা বলেন, “যারা মিথ্যা পরিচয়ে সুযোগ নিয়েছে, তাদের বাদ দেওয়া সরকারের সাহসী উদ্যোগ। এতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকবে।”
অন্যদিকে, বাতিল হওয়া ব্যক্তিরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন কি না, তা এখনো জানা যায়নি।

