আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ভিক্টরি টাইমস ৭১
সুদানের দারফুর অঞ্চলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশার শহরের একটি হাসপাতালেই অন্তত ৪৬০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। সশস্ত্র সংঘাতে আক্রান্ত এই অঞ্চল এখন সম্পূর্ণ মানবিক সংকটে নিমজ্জিত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাতে জানা যায়, Rapid Support Forces (RSF) নামে আধাসামরিক একটি বাহিনী শহর দখলের পর Saudi Maternity Hospital-এ প্রবেশ করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও সহিংসতা চালায়।
হাসপাতালের রোগী, সেবিকা ও স্বজনদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিতে অল্প সময়ের মধ্যেই শতাধিক মানুষ মারা যায়। স্যাটেলাইট চিত্র ও মানবাধিকার সংগঠনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ঘটনাটিকে “mass killing” বা গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় শুধু মৃত্যুই নয়, হাজার হাজার মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আশপাশের গ্রাম ও শহরগুলোতে তীব্র খাদ্য-ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে। WHO বলছে, “স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরও হামলা হয়েছে, কেউ কেউ অপহৃত হয়েছেন; হাসপাতালগুলো এখন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত।”
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ এই ঘটনাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
তারা অবিলম্বে স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে এবং RSF বাহিনীর ওপর জাতিসংঘের নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে RSF নেতৃত্ব ঘটনার দায় অস্বীকার করে “অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ” বলে দাবি করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দারফুর অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ হারালে সুদান আরও একবার বিভক্তির মুখে পড়তে পারে। বর্তমানে সেনাবাহিনী ও RSF-এর মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধ দেশটির প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে দিয়েছে।
অর্থনীতি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও শিক্ষা খাত সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে না পারলে দারফুরে পরিস্থিতি রোয়ান্ডা গণহত্যার মতো ভয়াবহ বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন,
> “গোলাগুলির শব্দ থামেনি এক মুহূর্তও। হাসপাতালে যারা ছিল—রোগী, শিশু, এমনকি গর্ভবতী নারীও রেহাই পায়নি।”
এই বিবরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণেও মিলেছে।

