জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইন খুনের ঘটনায় উঠে এসেছে প্রেমঘটিত চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রেমিক মাহিরের ঈর্ষায় ঘটে এই হত্যাকাণ্ড— জানিয়েছে পুলিশ।
নিজস্ব প্রতিবেদক | Victory Times 71
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রেমঘটিত নতুন তথ্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা-র সঙ্গে বুরহান উদ্দীন কলেজের শিক্ষার্থী মাহির রহমান এর দীর্ঘ ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। ছোটবেলা থেকেই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও সম্প্রতি সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে তিনি মাহিরকে বলেছিলেন যে এখন তিনি জুবায়েদকে পছন্দ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহির তার এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জুবায়েদকে খুন করে। তবে বর্ষা দাবি করেছেন, হত্যার পরিকল্পনা বা বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না।
ওসি বলেন, “তদন্তে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে— বর্ষা ও জুবায়েদের মধ্যে সরাসরি প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। বর্ষার কথার ভিত্তিতেই রাগে ক্ষোভে মাহির এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।”
তদন্তে আরও জানা গেছে, বর্ষার সঙ্গে জুবায়েদের বন্ধু সৈকতের পরিচয় হয় ফেসবুকে। পরে সেই সূত্রেই বর্ষা ও জুবায়েদের মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়।
তদন্ত কর্মকর্তার ভাষায়, “জিজ্ঞাসাবাদের সময় বর্ষাকে বেশ স্বাভাবিক দেখা গেছে। কোনো আতঙ্ক বা অনুতাপের লক্ষণ ছিল না।”
জুবায়েদ হোসাইন ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।
পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় এক বছর ধরে বর্ষাকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন তিনি। রোববার বিকেলে ছাত্রী বর্ষার বাসার তৃতীয় তলায় তাকে খুন করা হয়।
পুলিশ জানায়, সিঁড়ি বেয়ে উপরে পর্যন্ত রক্তের দাগ পাওয়া যায় এবং তৃতীয় তলায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় জুবায়েদের মরদেহ।
ঘটনার পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং তাতীবাজার মোড় অবরোধ করেন। পরে পুলিশ ছাত্রী বর্ষাকে হেফাজতে নেয়।
নিহত জুবায়েদের লাশ মিডফোর্ড হাসপাতালে</ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

